- ফের বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কবলে সাংবাদিক! - April 2, 2023
- আদর্শকে স্টল না দিয়ে প্রেস রিলিজ মুক্তচিন্তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের অবস্থানের দলিল - January 22, 2023
- বাচ্চারা কি গিনিপিগ নাকি? - January 19, 2023
তারিখটা ৪ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল, স্থান আখাউড়া। আখাউড়ার উপর ভারতের ১৪ নম্বর গার্ড ব্রিগেড আক্রমণ করেছিলো ৪ তারিখ ভোরে। তারা গঙ্গাসাগরের কাছে শত্রুর মুখোমুখি হন। বাঁ দিকের একটি অগ্রবর্তী কোম্পানির সঙ্গে ছিলেন ল্যান্স নায়ক অ্যালবার্ট এক্কা।

এ সময়ে পাকিস্তানিরা ভারী এবং হালকা উভর অস্ত্র দিয়ে হামলা চালাচ্ছিল। বিশেষ করে একাধিক মেশিনগানের জন্য ভারতীয় দল এগিয়ে যেতে পারছিলো না। তাই এক্কা নিজের জীবনের কথা না ভেবে মেশিনগান যে বাঙ্কার থেকে চলছিলো, তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। নিজে আহত হলেও বেয়োনেট দিয়ে হত্যা করলো দুই পাকিস্তানি সৈন্যকে। তারপর তিনি ও তার সৈন্যরা একে একে সব বাঙ্কার দখল করে দেড় কিলোমিটার সামনে চলে যান। ঠিক এ সময়ে একটি সুরক্ষিত দোতলা বাড়ির ছাদ থেকে মেশিনগান দিয়ে বৃষ্টির মত গুলি ছুঁড়ছিলো। এর আঘাতে এক্কা আবার আহত হন। কিন্তু আহত এক্কা এতেও দমে যাননি। আবার বুকে হেঁটে এগিয়ে যান বাড়িটির দিকে। সেখানে গিয়ে বাঙ্কারের উপর ছুঁড়ে দেন একটি গ্রেনেড। ফলে একজন নিহত এবং অন্যরা আহত হয়। কিন্তু তখন দোতলার মেশিনগান বন্ধ হয়নি। এক্কা তখন উক্ত বাড়ির পাশের দেয়াল বেয়ে উপরে উঠেন। তারপর বাংকারে ঝাঁপিয়ে পড়ে বেয়োনেট দিয়ে আক্রমণ করেন মেশিনগান চালককে। থেমে যায় শক্তিশালী মেশিনগানটি। দু’বার আহত এক্কা অল্প কিছুক্ষণ পরেই মারা যান। যুদ্ধের পর তাঁকে ভারতের সর্বোচ্চ সামরিক খেতাব “পরম বীরচক্র” খেতাব দেওয়া হয়। গঙ্গাসাগরের পতনের ফলে দুদিন পরে তারা আখাউড়া থেকে পালিয়ে যায়।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের হয়ে লড়াই করতে গিয়ে প্রাণ হারান প্রায় পনের হাজার ভারতীয় সৈন্য। উক্ত যুদ্ধে ভারতের ৭৪টি বিমান এবং হেলিকপ্টারও ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ট্যাংক-সহ বহু সামরিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়েছিলো ভারতের৷
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখা অ্যালবার্ট এক্কা’র মত সকল ভারতীয় সৈন্যদের বীরত্বের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা যাপন করছি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সৈন্যদের অবদান সত্যিই স্মরনীয়।
তথ্যসূত্রঃ
১) মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর(২০১০), গোলাম মুরশিদ।
২)কন্ট্রিবিউশান অফ ইন্ডিয়া ইন দ্যা ওয়ার অফ লিবারেশন অফ বাংলাদেশ(২০০৬), সালাম আজাদ।
৩)বাংলাদেশের মুক্তি(২০১৫), ড.আব্দুর রশিদ।
লেখকঃ মাহিন রহমান সাকিফ,শিক্ষার্থী, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।
1,108 total views, 2 views today